কারও সাথে প্রতারণা করলে এর গুনাহ মাফ হবে কীভাবে?

-মুফতি মুহাম্মদ হাসান।

প্রতারণা বা ধোঁকা দেওয়া এমন একটি গুনাহ, যা মানুষের হকের সাথে সম্পৃক্ত। ইসলামে প্রতারণাকে অনেক বড় ও ভয়ানক গুনাহ হিসেবে গণ্য করা হয়েছে। রাসুলুল্লাহ ﷺ বলেছেন:

যে প্রতারণা করে, সে আমাদের দলভুক্ত নয়। (সহিহ মুসলিম)

অতএব, কারও সাথে প্রতারণা করলে শুধু ইস্তিগফার পড়লেই গুনাহ মাফ হবে না; বরং এর জন্য কিছু বিশেষ শর্ত পূরণ করতে হয়।

প্রতারণার গুনাহ মাফের ধাপ

১. সত্যিকার তওবা করা

প্রথমেই আল্লাহর কাছে আন্তরিকভাবে তওবা করতে হবে। তওবার তিনটি শর্ত আছে:

গুনাহের কাজ ছেড়ে দেওয়া।

অতীতের জন্য লজ্জিত হওয়া।

ভবিষ্যতে আর না করার দৃঢ় সংকল্প নেওয়া।

২. অধিকার ফেরত দেওয়া

যার সাথে প্রতারণা করা হয়েছে, তার হক ফিরিয়ে দিতে হবে। যেমন—

যদি কারও টাকা বা মাল অন্যায়ভাবে নেওয়া হয়, তবে তা ফেরত দিতে হবে।

যদি মিথ্যা বলে ক্ষতি করা হয়, তবে সেই ক্ষতিপূরণ করতে হবে।

৩. ক্ষমা চাওয়া

কখনো শুধু টাকা ফেরত দিলেই যথেষ্ট নয়। বরং ভুক্তভোগীর কাছে গিয়ে ক্ষমা চাইতে হবে। যদি সে ক্ষমা করে দেয়, তবে আল্লাহর কাছে গুনাহ মাফের আশা করা যায়।

গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা

প্রতারণা শুধু দুনিয়ায় সম্পর্ক নষ্ট করে না, আখিরাতে ভয়াবহ শাস্তির কারণ হবে।
প্রতারণা করে আল্লাহর কাছে ক্ষমা পাওয়া যাবে না যতক্ষণ না মানুষের হক ফেরত দেওয়া হয়।
তাই মুসলিম জীবনে সততা ও আমানতদারি বজায় রাখা ফরজ।

 ‍সুতরাং প্রতারণার গুনাহ মাফ পেতে হলে আন্তরিক তওবা করতে হবে,  হক ফিরিয়ে দিতে হবে,  ভুক্তভোগীর কাছে ক্ষমা চাইতে হবে,  বেশি বেশি নেক আমল করতে হবে।


-মুফতি মুহাম্মদ হাসান।

শিক্ষক, জামিয়া ইসলামিয়া মাদরাসাতুল আশরাফ,ঢাকা,যাত্রাবাড়ী।
মিফতাহুল কুরআন মাদরাসা,ঢাকা,যাত্রাবাড়ী।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

২০২৫ সালে ঈদুল আজহার তারিখ | ১৪৪৬ হিজরির চাঁদ দেখা গেছে | ইসলামী জীবন ব্লগ

কুরবানির পশু নির্বাচনের সঠিক গাইডলাইন

সান্ডা ইসলামে হালাল না হারাম? হাদীসের আলোকে বিশ্লেষণ