পোস্টগুলি

কুরবানীর পশুর কোন কোন অংশ খাওয়া নিষেধ? ইসলামিক দৃষ্টিকোণ থেকে সতর্কতা

🕌 ইসলামী জীবন- মুফতি মুহাম্মদ হাসান | কুরবানী বিশেষ ব্লগ | জুন ২০২৫ কুরবানী শুধুই একটি ধর্মীয় রীতি নয়; এটি আল্লাহর জন্য ত্যাগ ও আনুগত্য প্রকাশের এক মহান সুযোগ। প্রতিবছর ঈদুল আযহায় মুসলিমরা আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য পশু কুরবানী করে থাকেন। তবে কুরবানী করার পাশাপাশি আমাদের জানা উচিত, কোন কোন অংশ খাওয়া হালাল এবং কোন অংশ খাওয়া হারাম বা নিষেধ। এই ব্লগ পোস্টে আমরা সংক্ষিপ্তভাবে আলোচনা করব— কুরবানীর পশুর এমন কিছু অঙ্গ সম্পর্কে যেগুলো খাওয়া ইসলামী শরীয়তের দৃষ্টিতে নিষিদ্ধ , এবং কেন তা থেকে বিরত থাকা জরুরি। 🔴 কুরবানীর পশুর যেসব অংশ খাওয়া হারাম বা নিষিদ্ধ: ১. রক্ত 📖 কুরআনে বলা হয়েছে: "তোমাদের জন্য হারাম করা হয়েছে রক্ত..."  — সূরা আল-বাকারা: ১৭৩ 🩸 অর্থাৎ রক্ত—বিশেষ করে জবাইয়ের সময় বের হয়ে আসা তরল রক্ত —খাওয়া সম্পূর্ণ হারাম। কেউ কেউ ভুলবশতঃ কলিজি বা মাংসের গা থেকে রক্ত না ধুয়ে খেয়ে ফেলে, এটাও এড়িয়ে চলা উচিত। ২. পিত্ত (তিতকুটে থলি, যাকে বলে ‘তিতা থলি’) 🧪 এটি পশুর যকৃতের পাশে থাকে এবং এটি খেলে শরীরের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর হতে পারে। ইসলামেও এটি খাওয়া নিষিদ্ধ বা অন্তত অনুচিত হিসে...

২০২৫ সালে ঈদুল আজহার তারিখ | ১৪৪৬ হিজরির চাঁদ দেখা গেছে | ইসলামী জীবন ব্লগ

ছবি
📅 ১৪৪৬ হিজরি সালের জিলহজ মাসের চাঁদ দেখা গেছে – ঈদুল আজহার তারিখ ঘোষণা ✍️ মুফতি মুহাম্মদ হাসান | ২৮ মে ২০২৫ | বুধবার সন্ধ্যা আলহামদুলিল্লাহ! আজ বুধবার, ২৮ মে ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, বাংলাদেশে ১৪৪৬ হিজরি সালের জিলহজ মাসের চাঁদ দেখা গেছে। জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির বৈঠকের পর এ ঘোষণা দেয়া হয়। এর ফলে ২৯ মে (বৃহস্পতিবার) থেকে জিলহজ মাস গণনা শুরু হবে। 📌 ঈদুল আজহার তারিখ: বাংলাদেশে পবিত্র ঈদুল আজহা উদযাপিত হবে শনিবার, ৭ জুন ২০২৫ । 🕋 ঈদুল আজহার তাৎপর্য ঈদুল আজহা মুসলিম উম্মাহর অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব। এটি হজের অন্তিম দিনগুলোতে পালন করা হয় এবং হজরত ইব্রাহিম (আঃ)-এর কোরবানি ও ত্যাগের স্মৃতিকে কেন্দ্র করে এই ঈদ পালন করা হয়। 👉 কোরআনুল কারিমে ইরশাদ হয়েছে: فَصَلِّ لِرَبِّكَ وَانْحَرْ      “তোমার রবের জন্য নামাজ পড়ো ও কোরবানি করো।” (সূরা কাউসার: আয়াত ২) 🐄 কোরবানির মূল উদ্দেশ্য কী? কোরবানির মূল উদ্দেশ্য হলো আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য ত্যাগ স্বীকার করা। পশু কোরবানি করার মাধ্যমে আমরা হযরত ইব্রাহিম (আঃ) ও ইসমাঈল (আঃ)-এর আল্লাহর প্রতি আনুগত্যের মহান দৃষ্টান্ত স্মরণ করি। 📝 গুরুত...

কুরবানির পশু নির্বাচনের সঠিক গাইডলাইন

ছবি
মুফতি   মোহাম্মাদ হাসান কুরবানির ঈদ আমাদের জীবনে এক বিশেষ আনন্দ ও ত্যাগের বার্তা নিয়ে আসে। কিন্তু অনেকেই কুরবানির পশু নির্বাচনের ক্ষেত্রে দ্বিধায় পড়েন—কোন পশু কুরবানির উপযোগী? বয়স, স্বাস্থ্য, ও শারীরিক দোষ-ত্রুটি সম্পর্কিত ইসলামি নির্দেশনা কী? এই ব্লগে আমরা হানাফি মাযহাবের আলোকে তা সহজভাবে তুলে ধরবো।  কুরবানির জন্য উপযুক্ত পশুর ধরন ✅ হালাল পশু: গরু/ষাঁড় ছাগল/ভেড়া দুম্বা উট ❌ অনুপযুক্ত প্রাণী: শিকারি ও হিংস্র পশু (যেমন: বাঘ, কুকুর) অশুচি বা হারাম প্রাণী (যেমন: শুকর)  পশুর ন্যূনতম বয়স (হাদীস ও ফিকহ অনুযায়ী ) 🐐 ছাগল/ভেড়া/দুম্বা: ১ বছর পূর্ণ (দুম্বার ক্ষেত্রে ছয় মাসের মোটা দমদমে হলে জায়েয) 🐄 গরু: ২ বছর পূর্ণ 🐪 উট: ৫ বছর পূর্ণ কুরবানির অযোগ্য পশু (যেসব পশু কুরবানি করা যাবে না) চোখে অন্ধ (এক চোখে হলেও) অত্যন্ত দুর্বল বা কঙ্কালসার কানে বা লেজে অর্ধেক বা তার বেশি কাটা খুব বেশি ল্যাংড়া (চলাফেরায় সমস্যা হয় এমন) অসুস্থ (যার অসুস্থতা সুস্পষ্ট) হাদীস: “চার ধরনের পশু কুরবানির জন্য অনুপযুক্ত: একচোখা, গুরুতর অসুস্থ, খুঁড়িয়ে...

সান্ডা ইসলামে হালাল না হারাম? হাদীসের আলোকে বিশ্লেষণ

ছবি
সান্ডা একটি মরুভূমির প্রাণী, যা নিয়ে অনেক মুসলমানের মাঝে বিভ্রান্তি রয়েছে। এটি কি হালাল? রাসূল (সা.) কি এটি খেয়েছেন? আসুন ইসলামের আলোকে বিস্তারিত জানি। সান্ডা কী?   সান্ডা (আরবি: ضَبّ ) হলো একটি গিরগিটি সদৃশ প্রাণী যা মূলত মরুভূমিতে বাস করে। এর শরীর শক্তিশালী ও লেজ কাঁটাযুক্ত। অনেকে একে ওষুধি গুণসম্পন্ন মনে করে খায়, যদিও তা বিজ্ঞানভিত্তিক নয়। হাদীসে সান্ডা সম্পর্কে কী বলা হয়েছে? রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর সামনে সান্ডা পেশ করা হয়। তিনি তা খেতে অস্বীকৃতি জানান, কিন্তু নিষেধ করেননি। হাদীসে এসেছে: “সান্ডা নবীজির সামনে পেশ করা হয়েছিল। তিনি খাওয়া থেকে বিরত ছিলেন। সাহাবারা জিজ্ঞেস করলেন, আপনি কি এটি খেতে নিষেধ করছেন? নবীজি (সা.) বললেন: না, এটা আমার জাতির খাবার নয়। আমি এর প্রতি অভ্যস্ত নই।” — (সহীহ মুসলিম: ১৯৪৪) ইসলামী ফিকহ মতে সান্ডা খাওয়া  হানাফি মাযহাব: সান্ডা খাওয়া মাকরূহ (অপছন্দনীয়)। মালিকি, শাফেয়ি, হাম্বলি: অনেক আলেম হালাল বলেছেন, কারণ রাসূল (সা.) নিষেধ করেননি। সান্ডা হত্যার হুকুম এক হাদীসে এসেছে: যে ব্যক্তি সান্ডাকে প্রথম আঘা...

📱 সোশ্যাল মিডিয়ায় জনপ্রিয়? আখিরাতে?

মুফতি মুহাম্মদ হাসান, শিক্ষক-জামিয়া ইসলামিয়া মাদরাসাতুল আশরাফ, যাত্রাবাড়ী, ঢাকা।           "ভাই, ভাই! আমার রিলটা ভাইরাল গেসে!"          "আপুর রিল দেখি এক রাতেই ১০ হাজার ফলোয়ার!"          "সবাই এখন ইনফ্লুয়েন্সার হতে চায়।" ঠিকই তো! এই সময়ের ট্রেন্ড - পপুলার হও, পরিচিত হও, আলোচনায় থাকো। কিন্তু এক মিনিট… আপনার নাম কি ফেরেশতারা চিনে? 💭 সোশ্যাল মিডিয়ার দুনিয়া VS আখিরাতের স্ক্রিন আজ আপনি হয়তো ইনস্টাগ্রামে ৫০K ফলোয়ার TikTok-এ মিলিয়ন ভিউ ইউটিউবে সাবস্ক্রাইবারের পাহাড় কিন্তু কিয়ামতের দিনে আপনার অ্যাকাউন্ট কি হাসানাত (নেকি) দিয়ে ভর্তি? “যে লোকের আমলদ্বার ভারী হবে, সে হবে সফল।” (সূরা আ'রাফ: ৮-৯) 🤳 কন্টেন্ট ক্রিয়েটর হলে আপনি দায়ী আপনার ভিডিও, রিল, ছবি— লোকে দেখে, শোনে, অনুসরণ করে। আপনি যদি হারামের দিকে মানুষ টানেন—তাদের গুনাহের অংশ আপনার আমলেও যোগ হবে। “যে ব্যক্তি কোন পাপের পথ চালু করল, তার গুনাহ এবং যারা তা অনুসরণ করবে তাদের গুনাহও তার নামে লেখা হবে।” (সহীহ মুসলিম) 🕊️ কী করলে আপনি আসল ইন...

আমরা কেনো নামাজ পড়ি?

  নামাজ মুসলিম জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ইবাদতগুলোর একটি। প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা আমাদের জন্য ফরজ (অবশ্য পালনীয়)। কিন্তু অনেকেই মনে মনে প্রশ্ন করে— আমরা কেন নামাজ পড়ি? শুধু আদেশ বলেই, নাকি এর পেছনে রয়েছে আরও গভীর কিছু অর্থ? 🔹 ১. আল্লাহর আদেশ আল্লাহ তাআলা কুরআনে বহুবার নামাজের গুরুত্ব উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেন: “তোমরা সালাত কায়েম করো এবং যাকাত দাও।” — (সূরা আল-বাকারা, আয়াত: ৪৩) এই আয়াতে সরাসরি নামাজের আদেশ করা হয়েছে। তাই নামাজ পড়া একান্তভাবে আল্লাহর নির্দেশ পালন করা। 🔹 ২. রাসূলুল্লাহ ﷺ–এর সর্বশেষ উপদেশ আমরা জানি, রাসূলুল্লাহ ﷺ যখন মৃত্যুশয্যায় ছিলেন, তখনও উম্মতকে বারবার বলছিলেন: “নামাজ! নামাজ! আর তোমাদের দাস-দাসীদের সম্পর্কে দায়িত্বশীল হও!” — (আবু দাউদ) এটি প্রমাণ করে যে নামাজ কতটা গুরুত্বপুর্ণ। 🔹 ৩. নামাজ আত্মশুদ্ধির উপায় নামাজ মানুষকে গুনাহ থেকে দূরে রাখে। আল্লাহ বলেন: “নিশ্চয়ই সালাত অশ্লীলতা ও মন্দ কাজ থেকে বিরত রাখে।” — (সূরা আনকাবুত, আয়াত: ৪৫) নিয়মিত নামাজ আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে ও অন্তরকে প্রশান্তি দেয়। 🔹 ৪. দুনিয়া ও আখিরাতে সফলতার চাবি নাম...